দুই ছেলেসহ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মায়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ

 

দুই ছেলেসহ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মায়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মা ও দুই ছেলে অর্থাৎ একই পরিবারের ৩ জন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে স্থানিও একজন মাওলানার নিকট কালেমা পড়ে এবং কোর্টে এফিডেভিটের মাধ্যমে তারা সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

তারা হলেন- নালিতাবাড়ী পৌর শহরের গড়কান্দা মহল্লার মৃত খগেন বিশ্বাসের স্ত্রী সবিতা রানী, তার ছেলে জয় ও বিজয়। বর্তমানে তারা নিজেদের নাম রেখেছেন আছিয়া বেগম, মোহাম্মদ হাসান ও মোহাম্মদ হোসাইন।

এ বিষয়ে নওমুসলিম আছিয়া বেগম জানান, আমার নিকট ইসলাম ধর্ম অনেক আগে থেকেই ভালো লাগতো। প্রতিবেশীদের মুসলমানদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখে আমারও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে মন চাইতো। প্রথমে আমার ছেলে বিজয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছে, বিষয়টি শুনে আমি এবং আমার অন্য ছেলে জয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়ে যাই।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ হোসাইন (বিজয়) জানান, আমরা কারো প্ররোচনায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিনি। আমি অনেক দিন থেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ইচ্ছা ছিল, এই জন্য নিজে নিজেই খতনা করিয়েছি। মঙ্গলবার আমার মা ও ভাইকে নিয়ে আমরা আদালতের মাধ্যমে এবং কালেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরপুর জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মেরাজ উদ্দিন জানান, প্রয়াত খগেন বিশ্বাসের স্ত্রী সবিতা রাণী বিশ্বাস ও তার দুই ছেলে স্বেচ্ছায় আমার কাছে এসে তাদের সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে ইচ্ছে প্রকাশ করলে, আমি তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসানের মাধ্যমে এফিডেভিট সম্পন্ন করেছি।
এমএমজেড
অন্যান্য

হজ পালনে থাকছে না বয়সের নিষেধাজ্ঞা

হজ পালনে থাকছে না বয়সের নিষেধাজ্ঞা

আগামী বছর থেকে পূর্ণ পরিসরে শুরু হবে পবিত্র হজ। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে থাকছে না কোনো নিষেধাজ্ঞা। বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ হজে যেতে পারবেন বলে জানান ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে তার সঙ্গে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নব-নির্বাচিত কমিটির নেতাদের সাক্ষাৎকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। 
গত হজে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে অনেক কম মানুষ হজ করতে পেরেছেন। আগামী হজ কেমন হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদি সরকারের সঙ্গে আমাদের যতটুকু আনঅফিসিয়াল কথা হয়েছে, সেই অনুযায়ী এই বিষয়ে যতটুকু জেনেছি, ইনশাআল্লাহ এবার হয়তো পূর্ণ হজই হবে। গত বছর আমাদের যেটা হয়েছিল সেটা হয়তো নাও হতে পারে। রেশিও হিসেবে আমরা যতটুকু পাওয়ার এবার হয়তো ততটুকু পাব। আর ৬৫ বছরের বিধিনিষেধের বিষয়টিও এবার নাও থাকতে পারে এইবারে হজে। আমরা এ বিষয়টি ইতোমধ্যে তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ১০ হাজার ব্যক্তি হজে যেতে পারেননি। এর মধ্যে ৭ হাজার রিপ্লেস করেছেন তারা সবাই। আর বাকি ৩ হাজার আমাদের ইচ্ছামতো দিয়েছি। আগামী বছর এ সিস্টেম চালু হলে কারও কোনো আবদার করার সুযোগ থাকবে না। তখন পুরো সিরিয়াল মেইনটেইন করতে হবে। আমাদের জন্য সেটা ভালো। 
ইএফ
অন্যান্য

মেয়াদ বাড়ল ওমরাহ ভিসার


মেয়াদ বাড়ল ওমরাহ ভিসার

এক মাস থেকে বাড়িয়ে তিন মাস ওমরাহ ভিসার মেয়াদ করেছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল-রাবিয়াহ জানিয়েছেন, যে কোনো দেশের মুসলিম নাগরিকদের জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমরাহ ভিসার মেয়াদ কম থাকায় প্রতি বছরই ওমরাহ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন অনেক হাজি। তাদের বিড়ম্বনার কথা বিবেচনায় করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট জানায়, তাসখন্দে দুদিনের সরকারি সফরের সময় ওমরাহ ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর এ ঘোষণা দেন হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল-রাবিয়াহ।
অন্যান্য

বাবা মানে হাজার বিকেল লিরিক্স | Baba Mane Hajar Bikel Lyrics

 

ইসলামী সংগীত: বাবা মানে হাজার বিকেল আমার ছেলেবেলা লিরিক্স। Baba Mane Hajar Bikel Amar Chelebela Lyrics in Bengali

শিল্পীঃ জাইমা নূর (Jaima Noor)
কথা ও সুরঃ তাসনীম সাদিয়া
******অডিও******
****** লিরিক্স ******
বাবা মানে হাজার বিকেল 
আমার ছেলে বেলা 
বাবা মানে রোজ সকালে
পুতুল পুতুল খেলা......(২)

বাবা মানে কাটছে ভালো 
যাচ্ছে ভালো দিন
বাবা মানে জমিয়ে রাখা 
আমার অনেক ঋণ......(২)

আমি যতই এলোমেলো ভুলের অভিধান
বাবা তুমি সময় মত সহজ সমাধান
জীবনের টানাপোড়েন কিছুই না জানি
আমার গানের স্বরলিপি তোমার মাঝেই খুঁজি

বাবার কাছে হইনা কাল আমি কোনদিনই
বাবা ডাকে আদর করে আমায় সোনামণি......(২)

বাবা মানে অনেক চাওয়া
বাবা মানে অনেক পাওয়া 
বাবা মানে ছোট্ট শূন্যতা
বাবা মানে অনেক পূর্ণতা

ছেলেবেলা হাতছানি দেয় আজও সকাল সাঝে
 আমি বড় হইনি আজ বাবা তোমার কাছে
 চিরদিন থাকবে বলো তুমি আমার সাথে
 মা বলে ডাকবে বল সারা জীবন ধরে

 বেলা শেষে তুমি আজও অনেক অভিমানে
 কেউ না জানুক আমি জানি তোমার সোনামণি......(২)

বাবা মানে হাজার বিকেল 
আমার ছেলে বেলা 
বাবা মানে রোজ সকালে
পুতুল পুতুল খেলা
বাবা মানে কাটছে ভালো 
যাচ্ছে ভালো দিন
বাবা মানে জমিয়ে রাখা
আমার অনেক ঋণ

বাবা মানে হাজার বিকেল 
আমার ছেলে বেলা

বাবা মানে রোজ সকালে
পুতুল পুতুল খেলা......(২)


এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন লিরিক্স || Ei Miche Duniya tumi thakba koto din lyrics


ইসলামী সংগীত: এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন লিরিক্স || Ei Miche Duniya tumi thakba koto din lyrics

শিল্পীঃ সাইম আল হাসান (Saim Al Hasan)
এবং
সাদমান সাকিব (Sadman Sakib)
গীতিকার ও সুর:
সাইম আল হাসান
----------------------লিরিক্স--------------------

এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন (২)
হঠাৎ করে উঠবে বেজে (২)
চলে যাওয়ার বীণ... 
এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন (২)

এই দুনিয়ার মিছে মায়ায় আছো তুমি ডুবে 
একবারও ভাবনি হয় চলে যেতে হবে (২)
কি হিসাব দেবে তুমি  (২)
শেষ বিচারের দিন.. 
এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন (২)

নতুন সাজে সাজবে তুমি 
সাদা পোশাকে
দলে দলে আসবে সবাই 
তোমায় দেখিতে (২)

তোমায় মনে রাখবে সবাই (২)
অল্প কিছুদিন।

এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন (২)
হঠাৎ করে উঠবে বেজে
চলে যাওয়ার বীণ
এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবা কতদিন (২)


শবে বরাতে হালুয়া রুটি খাওয়া যাবে কি না ? শায়খ আহমাদুল্লাহ | Sheikh Ahmadullah


শবে বরাতে হালুয়া রুটি খাওয়া বা তা পালন করা নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়...

শবে বরাত কি বিদআত ?

শায়খ আহমাদুল্লাহ : শবেবরাত উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকতা করা, শিন্নি দেওয়া, হালুয়া বিতরণ করা নিয়ে একটা জাল হাদীস বানাইছে যে, নবীজির দাঁত ভাঙ্গছে এর জন্য হালুয়া খাইছে এজন্য আমরাও হালুয়া খাই। কত বড় ছিটারি আপনি চিন্তা করেন, আপনার বাবার পা ভেঙ্গেছে। এর জন্য উনি একটা লাঠি নিয়ে খুঁড়িয়ে হাটে। এখন আপনি বলছেন, উফ আমার বাপে শত্রুর সাথে লরাই করতে যেয়ে পা ভেঙ্গে ফেলেছে। অতএব বাপের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করতে যেয়ে আমার ভালো পা নিয়ে লাঠিয়ে দিয়ে খুঁড়াইতেছি। আপনার বাপে ঐ লাটিটা দিয়ে আপনার মাথায় বারি মারবে কি মারবেনা? বলবে, বেয়াদ্দপ তুই আমাকে ভেঙ্গাইতেছছ...?
যদি নবীজির দাঁত ভাইঙ্গা হালুয়া খেয়ে থাকেন, তাহলে আপনিও দাঁতটা ভাঙ্গেন, তারপর হালুয়া খান। আপনি ভালো দাত নিয়া হালুয়া খাইতেছেন, এর থেকে বাটপারি আর কিছু হতে পারে...! আর উহুদের যুদ্ধ কি শাবান মাসে হইছে? আপনি এইটা কোথায় পেলেন? এগুলো হালুয়া খাওয়ার জন্য মাসালা বানাইছে।

শবে বরাতের আমল

ভাইয়েরা আমার, শবে বরাত কেন্দ্রিক রাত্রি জাগরন, দিনি ইবাদত এবং আরো যে কাজ আছে এগুলো কোনটি বিশুদ্ধতা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে এইটা জানা যায় যে, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা  হিংসুক এবং শিরিক কারি ছাড়া বাকিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন।

শবে বরাতের রোজা কয়টি

যেহেতু শাবান মাস নফল রোজার মাস। তাই অন্য দিনের মত নফল রোজা রাখতে পারেন। তবে শবে বরাতের জন্য স্পেশাল রোজা রাখা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত না। 

শবে বরাত নিয়ে বহুৎ মারামারি-কাটাকাটি আছে। দুঃখের বিষয় সমাজে নামাজের খবর নেই, হাজার হাজার হারামের কাজ চলতেছে, সেখানে সবাই মারামারি শবে বরাতে হালুয়া রুটি খাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে। আল্লাহ আমাদের বোঝার তৌফিক দান করুক।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ

লিভ টুগেদার ও ইসলাম : শায়খ আহমাদুল্লাহ

লিভ টুগেদার ও ইসলাম : শায়খ আহমাদুল্লাহ

বিয়ের আগে একটু-আধটু জানাশোনা ও লিভ টুগেদার হলে বিবাহ-পরবর্তী বোঝাপড়াটা ভালো হয়, এ দাবি অনেকের। অথচ অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলে। সরাসরি বিবাহ করা আগের জেনারেশনের পারস্পরিক বোঝাপড়া আজকের লিভ টু গেদার প্রজন্মের চেয়ে ভালো, তাদের ভালোবাসা আমাদের চেয়ে নিখাদ এবং তাদের সম্পর্ক আজকের জেনারেশনের চেয়ে বেশি টেকসই ছিলো।

সুতরাং প্রিয় তরুণ, দৃঢ়তার সাথে হারামকে না বলুন। হালাল সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করুন। শয়তানের ফাঁদে পা না দিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশিত পথে থাকুন। জোয়ারে গা না ভাসিয়ে স্রোতের বিপরীতে চলতে শিখুন। শান্তির সৃষ্টিকর্তা তার অবাধ্যতার পথে শান্তি রাখেননি। যেটাকে আপনি সুখ ভাবছেন সেটা মূলতঃ মরীচিকা।

বৈবাহিক সম্পর্ক আর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের মধ্যে পার্থক্য হলো— প্রথমটিতে সামাজিক কমিটমেন্ট, সাক্ষ্য-প্রমাণ ইত্যাদি থাকে; দ্বিতীয়টিতে এসব থাকে না। যার কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে যে জবাবদিহিতা থাকে, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে তা থাকে না। ফলশ্রুতিতে বৈবাহিক সম্পর্কে প্রতারণার সম্ভাবনা খুবই কম থাকলেও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে তা অহরহ হয়ে থাকে। এছাড়াও বৈবাহিক সম্পর্কে যতোটা নির্মল ও সত্যিকারের ভালোবাসা থাকে, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে ততোটা থাকে না। বেশিরভাগ বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে ভালোবাসার খোলসে ভোগটাই মুখ্য থাকে।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ

ফরজ গোসল করার সঠিক নিয়ম - শায়খ আহমাদুল্লাহ



ফরজ গোসল করার সঠিক নিয়ম    

শায়খ আহমাদুল্লাহ : ফরজ গোসল করার পদ্ধতি হল; আপনার গোসল ফরজ হলে গোসলখানায় গিয়ে সর্বপ্রথম আপনার শরীরে যে জায়গায় নাপাক লাগছে বা কাপড়ের যে জায়গা নাপাক লাগছে ঐ জায়গাটা পরিষ্কার করে নেওয়া। যদি আপনার নাপাক লাগার জায়গাটা চিহ্নিত থাকে তাহলে জায়গাটা ধুয়ে নিন। এরপরে নামাজের জন্য যেভাবে ওযু করেন সেভাবে হাতের কবজি ধুয়ার পরে কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া, মুখ ধোয়া, হাতের কনুই পর্যন্ত ধুয়ে আপনি আপনার মত করে গোসল করে নিন। গোসল করা শেষ হয়ে গেলে যখন বের হয়ে যাবেন তখন পায়ে পানি ঢেলে টাকনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলুন।  

গোসল করার সময় আপনার শরীরের প্রতিটি অঙ্গের প্রতিটি জায়গায় পানি পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। বগলের নিচ থেকে নিয়ে, আংগুলের চিপায় থেকে নিয়ে, নাবির পেচ সহ প্রত্যেকটা জায়গায় যেন পানি যায় সেজন্য সেখানে পানি পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। একটু জায়গাও যদি শুকনা থাকে তাহলে ফরজ গোসল হবে না। নেলপালিশ বা কোন রং এর কারণে যদি কোন আবরণ শরীর উপরে থাকে তাহলে তা তোলে নিতে হবে। তা না হলে ফরজ গোসল আদায় হবে না।

প্রথমে শরীর এবং কাপড় থেকে নাপাক গুলো ধুয়ে নেব, এর পরে ওযু করব পূর্ণাঙ্গভাবে, পা ধুয়া বাদে। এরপরে গোসল করব, আর বের হওয়ার সময় পা টাকনু পর্যন্ত ধুয়ে তারপর বের হয়ে যাব। এই গোসলের সাথে আমার ওযু হয়ে গেলো। আর ওযু করার দরকার নাই। অনেকেই গোসল করেও ওযু করেন এটা কোন প্রয়োজন নাই। তবে কেউ যদি গোসল করা অবস্থায় তার পেশাব চলে আসে এবং তিনি পেশাব করে দেন বা যদি ওযু ভঙ্গের কারণ তার ভিতরে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে গোসলের পরে নতুন করে ওযু করতে হবে।


মোহরানা কি স্বামীর পক্ষ থেকে উপহার নাকি তালাক এর বিপরীতে সুরক্ষা বিশেষ?


অনেক মুসলিম পুরুষের মনে প্রশ্ন জাগে, মোহরানা কি মাফ হয়? এটা কি স্ত্রীর জন্য উপহার সরূপ? প্রকৃতপক্ষে সঠিক পদ্ধতিতে মোহরানা আদায়ের নিয়ম কি? সবকিছু মিলিয়ে মোহরানা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? এই সকল বিষয় নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহকে প্রশ্নের করা হয়। প্রশ্নঃ

মোহরানা কি স্বামীর পক্ষ থেকে উপহার নাকি তালাক এর বিপরীতে সুরক্ষা বিশেষ?

শায়খ আহমাদুল্লাহ : এর উত্তর হলো, মোহরানা এই দুটির কোনোটিই নয়। না এটি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর জন্য দেওয়া উপহার। না এটি বিবাহের জন্য কোন সুরক্ষা বিশেষ। আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন মোহরানাটা হল বিবাহ টিকিয়ে রাখার একটা মাধ্যম বা বিবাহের জন্য একটা সুরক্ষা ব্যবস্থা। এজন্য মোহরানার অংকটা বেশ বড় রাখা হয়, যাতে ছেলে যেন-তেন কারণে বিবাহ ভাঙ্গার কথা বলতে না পারে, তালাকের কথা বলতে না পারে। কারণ তালাক দিতে গেলে তাকে মোহরানার টাকা দিতে হবে। তারমানে মোহরানার কথাটা তালাকের সময় আলোচনার বিষয়, এটি আমাদের একান্তই ভুল ধারণা। বরং মোহরানাটা হল স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার। আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমের সূরা নিসার ৪নং আয়াতে বলেছেনঃ وَ اٰتُوا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَۃً তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে তাদের প্রাপ্য মোহরানা পরিশোধ করে দাও সন্তুষ্টচিত্তে। কারণে এটি তাদের অধিকার, তাদের প্রাপ্য। এটা সন্তুষ্টির সাথে তাদেরকে দিয়ে দিতে হবে এবং বিবাহের শুরুতে দিয়ে দিতে হবে।

বোঝাগেল যে, মোহরানা বিবাহের সুরক্ষা বিশেষ নয়, আর এটি উপহারও নয়। উপহার হলেতো তার অধিকার হত না। আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ করেছেন, আল্লাহর এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমরা স্ত্রীকে মোহনা পরিশোধ করে থাকি। কোন অবস্থাতেই বিলম্ব করে তালাক হলে তখন এটা নিয়ে আলাপ হবে সে পর্যন্ত অপেক্ষা করা অনুচিত। আবার এটাকে স্বামীর পক্ষ থেকে দেয়া নিছক উপহার এরকম মনে করা উচিত নয়। মোহরানা একান্তই স্ত্রীর পাওনা বা অধিকার। 
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বোঝার তৌফিক দান করুন।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ
প্রশ্নঃ আশুরা কি ?

বর ও কনের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা নিয়ে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কি?

অধুনিক সমাজে বিয়ের পূর্বে অনেক পরিবার পাত্র পাত্রীর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে থাকেন। সন্তান ধারনের ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া বর্তমান সময়ে নানান রকমের সংক্রামক রোগের কারনে ছেলে মেয়ের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা এবং অন্যান্য মেডিকেল টেস্ট করিয়ে নেওয়া দিনকিদিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শায়খ আহমাদুল্লাহ এর নিকট বর ও কনের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা নিয়ে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন মাহফুজ সাহেব নামক এক ব্যক্তি। প্রশ্নঃ-

বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র পাত্রীর রক্তের গ্রুপ জেনে নেয়াতে কি কোন অসুবিধা আছে ?

শায়খ আহমাদুল্লাহ : খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন, এখনকার সময়ে বিষয়টি প্রায় দেখা যায়। বিবাহকে কেন্দ্র করে, পাত্র-পাত্রী একে অন্যের রক্তের গ্রুপ যদি জেনে নেন তাতে মৌলিকভাবে কোনো অসুবিধা নেই। বিশেষ করে দুজনের রক্তের গ্রুপ এক রকম হলে বা বিশেষ কোন রক্তের গ্রুপ হলে সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে কিনা; এর যদি বিজ্ঞানীক কোন ভিত্তি থাকে, সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে যদি ব্লাড গ্রুপ কার কোনটি জানতে চাওয়া হয় তাতে কোন অসুবিধা নেই। নবী (সাঃ) নির্দেশ করেছেন, বিবাহের আগে যেন তাকে দেখে নেই, যাচাই করে নেই। ( আবু দাউদ ২০৮২)

এই দেখে নেওয়ার যে কথটা নবী (সাঃ) বলেছেন এর অধীনে আমরা তার ব্লাড গ্রুপ কি সেটি জানতেই পারি। এতে শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজ হয় না। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এখানে যদি কোন প্রকার কুসঙস্কারাচ্ছন্ন বিশ্বাসের জায়গা থেকে বা কোন শুভ-অশুভ এরকম কোন ধারণা যা অবৈজ্ঞানিক অযৌক্তিক দাবি, কুরআন হাদিস সমর্থন করেনা এমন কোন ধারণা থেকে যদি কেউ ব্লাড গ্রুপ জানতে চান, সেটি অবশ্যই নিন্দনীয় এবং পরিত্যাজ্য।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ
প্রশ্নঃ প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে কি কোন ছাড় রয়েছে?
প্রশ্নঃ প্রবাসী স্বামীর সাথে ভিডিও কলে স্ত্রী খুলামেলা ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা বা ছবি শেয়ার করলে গুনাহ হবে কি না?
প্রশ্নঃ আশুরা কি ?
প্রশ্নঃ অজু ছাড়া কুরআন ধরা যাবে কি?
প্রশ্নঃ সহবাসের পর ফরজ গোসল না করে মেয়েরা গৃহস্থলী কাজ করা বা শিশুকে দুধ পান করানো যাবে কি না?

প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে কি কোন ছাড় রয়েছে?

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে,  ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে কি না? এই বিষয়ে কোন ছাড় আছে কি না? ফরজ গোসল দেরিতে করলে কি হয়? এই সকল বিষয় নিয়ে রাশেদুল ইসলাম শান্ত ভাই প্রশ্ন করেছিলেন শায়খ আহমাদুল্লাহকে;

প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে কি কোন ছাড় রয়েছে?

উত্তরঃ ভাই, প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে আপনার ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা কষ্টকর হলে আপনার জন্য ছাড় রয়েছে। যদি ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করলে আপনার অঙ্গহানি হতে পারে, প্রচন্ড রকমের রোগ দেখা দিতে পারে, জীবন নাশের ভয় হয় এবং পানি গরম করার কোন উপায় না থাকে তাহলে তায়াম্মুম করতে পারেন। পঞ্চগড়ের মত কিছু এলাকায় অনেক বেশি শীত পরে সেখানে এরকম কোন সিচুয়েশনে থাকতে পারে। কিন্তু নরমালি অন্যান্য এলাকা গুলোতে, যেমন ঢাকা বা ঢাকার আশেপাশে অন্যান্য জেলাগুলোতে যে পরিমাণ শীত পড়ে তাতে পানি ব্যবহার করল জীবন হুমকির মধ্যে পড়বে এরকম পরিস্থিতিতে পড়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। সে জায়গা থেকে এটি আমাদের জন্য করা জায়েয হবে না অর্থাৎ তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না। গোসল করতে হবে।

আর গরম পানির ব্যবস্থা কমবেশি প্রায় সকল জায়গায় আজকাল থাকে। একটু কষ্ট হয়, একটু বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। অন্যরা জেনে যাবে, তো তাতে কি? আমার তো আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে হবে। যার কারণে এটি আপনার অবহেলা করা যাবেনা। 

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ

প্রশ্নঃ আশুরা কি ?

প্রবাসী স্বামীর সাথে ভিডিও কলে স্ত্রী খুলামেলা ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা বা ছবি শেয়ার করলে গুনাহ হবে কি না?

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর শায়খ আহমাদুল্লাহ (রাঃ) এর এই ভিডিও থেকে নিচের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।

প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রীঃ আমার স্বামী প্রবাসে থাকে, মাঝেমধ্যে তিনি ভিডিও কল করে কিছুটা খুলামেলা ভাবে আমাকে দেখার জন্য আবদার করেন। আমার প্রশ্ন হল,

স্বামীর সাথে খুলামেলা ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা বা খুলামেলা ছবি শেয়ার করা গুনাহ হবে কি না?

ইন্টারনেটের বদৌলতে প্রবাসী ভাইয়েরা ইমু ভিডিও কল, মেসেঞ্জারে ভিডিও কল, হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল বা অন্যান্য অ্যাপ দিয়ে অনলাইন ভিডিও কল এর মাধ্যমে তাদের পরিবারের সাথে ভিডিও চ্যাট করে থ্যাকেন। প্রবাসীর স্ত্রীরা তাদের স্বামীর সাথে ভিডিও চ্যাট করা ও একান্ত ছবি শেয়ার করা যাবে কি না?

______________

প্রশ্নঃ সহবাসের পর গোসল না করা পর্যন্ত  কোন কোন কাজ করা নিষেধ

_________________

শায়খ আহমাদুল্লাহঃ প্রিয় বোন যাদের স্বামী প্রবাসে থাকেন বা দেশে দূরে থাকেন, সে সকল স্বামী স্ত্রী একে অন্যের যে কোন মুহূর্ত তারা শেয়ার করতে পারবেন, ছবি হউক বা ভিডিও কলের মাধ্যমে হউক। যেহেতু স্বামী স্ত্রী পরস্পরের জন্য কোন পর্দা নেই, অতয়েব তারা একে অন্যের যেকোন মুহূর্তের যেকোন দৃশ্য শেয়ার করতে পারেন, দেখতে পারেন। এটি জায়েজ আছে। বিশেষ করে স্বামী যখন দূরে থাকে বা স্ত্রী যখন দূরে থাকে তখন একে অন্যকে এই বিষয়ে সহযোগিতা করা জরুরী তাদের চরিত্রকে হেফাজত করার জন্য। যদিও খুব দীর্ঘ সময় একে অন্যের থাকে দূরে থাকা ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থাকে প্রশংসনীয় বিষয় নয়। যেহেতু এর মাধ্যমে আমরা অনেকেই দুশ্চরিত্র কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পরি এবং আমাদের চরিত্রকে হেফাজত করতে পারি না।

মোটকথা হল যে, মৌলিকভাবে এটি নাজায়েজ নয়। আপনি ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলতে পারেন যে কোন মুহূর্ত আপনি শেয়ার করতে পারেন এবং ছবিও আদান প্রদান করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, আজকালকার এই সকল ভিডিও কল গুলো যে কোন মাধ্যমেই করিনা কেন এগোলু থার্টপার্টির কাছে অনেক সময় যায় বা তারা এটাকে মনিটর করতে পারে, সংরক্ষণ করতে পারে। এই ক্ষেত্রে আমাদের প্রাইভেসি যাতে নষ্ট না হয়। একজন মুসলিম নারী পুরুষ অনেক বেশী সম্রান্ত, অনেক বেশী আত্মসম্মানবোধ সম্পূর্ণ হবেন। তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত যেন অন্যের হাতে না যায়, বেহাত না হয়। এই বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইমু ভিডিও কল রেকর্ড করা যাবে কি না?

ভিডিও কল রেকর্ডার ব্যবহার করে মোবাইলে এই সমস্ত ছবি ভিডিও ইত্যাদি ধারণ করার ক্ষেত্রে অন্য কারুর হাতে যেতে পারে, অন্য কারুর নজরে পরতে পারে। এই সম্ভাবনাগুলো নানা ভাবেই থাকে। সেগুলো যেন কোন ভাবেই না হয়, বিষয়টি উভয়কে সতর্কতার সহিত লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই শর্তে এগুলো জায়েজ আছে, ইনশাআল্লাহু বিইজনিল্লাহ।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ

যৌ'ন খেলনা অর্থাৎ সে'ক্স ট'য় ব্যবহার করা কি জায়েজ?

প্রশ্নঃ আমি বর্তমানে লালসা সহ্য করতে অক্ষম এবং আমি ভয় পাচ্ছি যে এটি আমাকে নিষিদ্ধ কিছুতে নিয়ে যেতে পারে। ব্যভিচারে পতিত হওয়ার ভয়ে মনকে লালসা মুক্ত করার অভিপ্রায়ে যৌ'ন খেলনা অর্থাৎ সে'ক্স ট'য় ব্যবহার করা কি জায়েজ? প্রশ্নটি আর সংক্ষেপে, কৃত্রিম গর্ভের মতো যৌ'ন খেলনা ব্যবহার করা কি জায়েজ? কারণ আমি বর্তমানে বিয়ে কিংবা রোজা রাখতে পারছি না।

এই বিষয়টি নিয়ে আলেমগন ঐকমত হয়েছেন যে, কৃত্রিম গর্ভের মতো যৌ'ন খেলনা ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্য এবং ধর্মের জন্য একটি স্পষ্ট বিপদ। এই বিষয়টির সাথে হ'স্তমৈ'থুন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তাই প্রথমে হ'স্তমৈ'থুন সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন।

হ'স্তমৈ'থুন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে;

প্রথমে বলে রাখা দরকার অধিকাংশ আলেমের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, হ'স্তমৈ'থুন নিষিদ্ধ। তাদের দলিলঃ আল্লাহ পাক বলেন, وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ  (المؤمنون:5,6)

এই আয়াতটির উপর ভিত্তি করে তারা হ'স্তমৈ'থুন এবং অন্য কিছু দ্বারা যৌ'নাচার নিষিদ্ধ বলেছেন। বর্তমানে যৌ'নাচারের একমাত্র বৈধ পথ হচ্ছে স্ত্রী সহ'বাস, এছাড়া অন্য সব পথ নিষিদ্ধ। 

|||||||||||||||||||||||||||

প্রশ্নঃ প্রবাসী স্বামীর সাথে ভিডিও কলে স্ত্রী খুলামেলা ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা বা ছবি শেয়ার করলে গুনাহ হবে কি না?

||||||||||||||||||||||||||||

হ'স্তমৈ'থুন করা কখন জায়েজ?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে; আমি প্রবাসে থাকি, আমার বিয়ে করা বা রোজা রাখা সম্ভব না। এখানে পতি'তাবৃত্তি প্রকাশ্যে হয়। নিজেকে সংযত রাখা প্রায় অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে আমার করনীয় কি?

শেখ ইবনে উসাইমীন (রাঃ) বলেন, এই ক্ষেত্রে শরিয়তে প্রতিষ্ঠিত নিয়ম হল যে, আমাদেরকে অবশ্যই দুইটি খারাপের মধ্যে সর্বোচ্চটিকে সর্বনিম্ন দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। এইরূপ অবস্থায় সে হ'স্তমৈ'থুন করতে পারবে। তবে হ'স্তমৈ'থুন কোন ভাবেই অভ্যাসে পরিণত করা জায়েজ নয়।

এখানে লক্ষণীয় একটি বিষয় হল, যৌ'ন খেলনা অর্থাৎ সে'ক্স ট'য় উপভোগ করা হ'স্তমৈ'থুনের চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। কারণ এর ফলে দেখা যায়; এই ধরনের অভ্যাস দ্বারা প্রদত্ত যৌ'ন তৃপ্তির অভাবের কারণে পুরুষ'ত্বহীনতা, অকাল বী'র্যপাত, দুর্বল বী'র্য এবং অ'ণ্ডকোষের বড় ক্ষতি হয়ে থাকে। এর ফলে মানসিক ভাবে বিবাহ সম্পর্কে অনীহা তৈরি হয়। আর যদি বিবাহিত হয়, তাহলে স্ত্রী সাথে স্বামীর যে সম্পর্ক তাতে নানান ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতেও সে'ক্স ট'য় মানুষের স্বাভাবিক যৌ'ন শক্তিকে ধ্বংস করে দেয়।

হ'স্তমৈ'থুন ছাড়ার উপায়

নিজের জৈবিক চাহিদা নিয়ন্ত্রেন এবং হ'স্তমৈ'থুন ছাড়ার জন্য প্রথম কাজ হল বিয়ে করে ফেলা। বিয়ে করার তৌফিক না থাকলে রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন রাসুল (সাঃ)।

জীবন ঘনিষ্ঠ অন্যান্য প্রশ্ন সমূহঃ

আশুরার ঘটনাবলী বা ১০ই মহররমের ইতিহাস ও আশুরার তাৎপর্য

আশুরা কি ?

আজ ইসলামী ঐতিহ্যের সন হিজরী বর্ষের প্রথম মাস, মুহাররমের ১০ তারিখ। এদিনকে আশুরা বলা হয়। এই দিনটি মিশ্র ইতিহাসের দিন। 

আশুরার ঘটনাবলী

একদিকে আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে এই দিনে আল্লাহর নবী মুসা (আ.) জালেম ফিরআউনের কবল থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। অবাধ্য ফেরআউনের সকল দম্ভ চূর্ণ করে তাকে সদলবলে নদে নিমজ্জিত করেছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা। 

অপর দিকে প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওফাতের একান্ন বছর পর ইরাকের কারবালা নামক স্থানে ইয়াজীদের পাঠানো জালেম সৈন্যদের হাতে সপরিবারে নৃশংসভাবে নিহত হন প্রিয় নবীর প্রিয় দৌহিত্র জান্নাতী যুবকদের নেতা হুসাইন (রা.)।

আশুরার তাৎপর্য

আল্লাহর নবী মূসা (আ.)-এর মুক্তির ঘটনাই আশুরার দিনটির তাৎপর্যের মূল কারণ। সে কারণেই রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দিনে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আমাদেরকে সিয়াম পালন করতে নির্দেশ করেছেন।

সুতরাং আশুরা মানে মূলত মূসা (আ.)-এর মুক্তি ও বিজয়ের দিন। তবে  ইতিহাসের পরিক্রমায় একই দিনে যে বর্বরতম ঘটনা ঘটেছে, তা যে কোনো মুমিনে-হৃদয়ে রক্তক্ষরণের কারণ। ঠিক যেভাবে আমাদের হৃদয়ে রক্ত ঝরে নানা সময়ে মুসলমান নামধারী মুনাফিকদের দ্বারা ইসলামের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ খলীফাসহ বহু সাহাবী ও সালাফের নৃশংস হত্যাকাণ্ডেও।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে আশুরার মূল তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ও পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে সত্য ও ন্যয়ের পথে অবিচল থাকার শিক্ষা গ্রহণের তাওফীক দান করুন। মূসা (আ.)-এর ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়— সব কষ্ট ও বাধা এক সময় কেটে যায়, শুধু সময় আর আর ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার অপেক্ষা।

আশুরা সিয়াম পালনের দিন। এটাই প্রিয় নবীর আদর্শ। হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের ঘটনায় আমরা শোকার্ত ও ব্যথিত। কিন্তু সেই শোক পালনের নামে তাজিয়া মিছিল, নিজ শরীরে আঘাতসহ যাবতীয় কুসংস্কার ইসলামেই নিষিদ্ধ। প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, ‘যারা শোকে গালে চাপড়ায়, জামার বুক ছিড়েঁ ফেলে ও জাহিলি যুগের মতো চিৎকার করে, তারা আমাদের তরীকাভুক্ত নয়।’ (সহীহ বুখারী: ১২৯৭)

মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন, ভুল-বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করুন। সুন্নাতের আলোয় উদ্ভাসিত করুন, বিদআতের কলুষ থেকে মুক্ত রাখুন।

(উপরে উল্লেখিত লেখাটি শায়খ আহমাদুল্লাহ (রঃ) এর ফেজবুক পোষ্ট থেকে নেওয়া)
আশুরা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

আশুরা কত তারিখে ?

উত্তরঃ শুক্রবার । ২০ আগস্ট ২০২১ ইং। ১০ মহররম ১৪৪৩ । ৫ ভাদ্র ১৪২৮

আশুরা নামের অর্থ কি ?

উত্তরঃ মুহাররম মাসের ১০ম দিনকে 'আশুরা' নামে অভিহিত করা হয়। আশুরা' শব্দের অর্থ ১০ম বা দশমী।

আশুরার রোজা কয়টি ?

উত্তরঃ আশুরার রোজা ২ টি।

আশুরার রোজা কত তারিখ ?

উত্তরঃ মুহাররম মাসের ৯-১০ তারিখ অথবা ১০-১১ তারিখ।

আশুরার রোজা রাখার নিয়ম ?

উত্তরঃ "নিয়ম" শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা। আপনি মনে মনে স্থির করলেন যে, আপনি আগামী কাল আশুরার ফজিলত পূর্ণ দিনে রোজা রাখবেন তাহলেই আশুরার রোজা রাখার নিয়ম  হয়ে যাবে।

অন্যান্য জীবন ঘনিষ্ঠ প্রশ্ন সমূহঃ

বাংলাদেশী সহ সকল বিদেশিরা ওমরাহ পালনের জন্য যে যে শর্ত মানতে হবে


করোনাভাইরাসের কারণে বিদেশিদের জন্য ওমরাহ  প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল। অবশেষে সীমিত পরিসরে হজ আয়োজনের পর সৌদি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে, নতুন আরবি বছর ১৪৪৩ হিজরি সনের ১ মহররম অর্থাৎ ১০ই আগস্টের পর থেকে যারা ওমরাহ পালন করতে চায় তারা বিশেষ কিছু শর্ত মেনে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন।
প্রধান শর্ত সমূহঃ ওমরাহ পালন কারি কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য রাজি হতে হবে। এবং সৌদি সরকার কর্তৃক স্বীকৃত করোনার টিকা ফাইজার, অক্সফোর্ড, মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা  অবশ্যই নিতে হবে। চীনের ভ্যাকসিন নিলে তাকে বুস্টার ডোজ নিতে হবে।
সৌদি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশের মুসল্লিরাও তৃতীয় কোনো দেশে কোয়ারেন্টাইন করে সৌদি আরব যেয়ে শারীরিক দূরত্ব মেনে ওমরাহ পালন করতে পারবে। তবে খুশীর খবর হল, বাংলাদেশের নাম এই নিষেধাজ্ঞা তালিকায় নেই। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে- পাকিস্তান, ভারত, মিশর, লেবানন, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল  এবং আর্জেন্টিনা।

জীবন ঘনিষ্ঠ কিছু প্রশ্নঃ

অযুর গুরুত্ব এবং অযু সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

অযুর গুরুত্ব :

অযু বা পবিত্রতা হল নামাজের চাবি। সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত নবী (সঃ) একটি হাদিস, مفتاح الصلاة الطهور  অর্থঃ নামাজের চাবিকাঠি হল পবিত্রতা । সুতরাং চাবি যদি ঠিক থাকে, পারফেক্ট হয়, তাহলে তালা খুলবে। আর যদি চাবি পারফেক্ট না হয় বা ঠিক না থাকে তাহলে তালা খুলবে না। ঐ চাবি দিয়ে আপনি ঘরে প্রবেশ করতে পারবেন না।

মনে করুণ জান্নাত হল আমাদের ঘর বা গন্তব্য। যেখানে ঢুকতে হলে আমদেরকে সালাতের তালাটুকু খুলে ঢুকতে হবে। অর্থাৎ সালাত পরে ঢুকতে হবে। আর সালাতের চাবি হল পবিত্রতা।

সুতরাং আমরা বলতে পারি, পবিত্রতা চাবি, তার তালা হল সালাত, যা পড়ে আমরা ঢুকতে যাচ্ছি জান্নাতে। আমার শেষ গন্তব্য জান্নাতে। যেখানে যেতে হলে আমাকে আপনাকে অবশ্যই সালাত ঠিক করতে হবে। আর সালাত ঠিক করতে হলে তার চাবি ঠিক থাকতে হবে।

পবিত্র হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হল অজু। অজু কারার সময় বেশকিছু ত্রুটি বা ভুলভ্রান্তি আমাদের হয়ে থাকে। যে ভুলগুলো হয়তো আপনিও করেন। ঐ ভুলগুলো প্রতিনিয়ত করছি, কিন্তু আমরা জানিনা। নবী (সঃ) বলেছেন, لا تقبل صلاة بغير طهور অর্থঃ নামাজ কবুল করা হবে না পবিত্রতা ছাড়া। আল্লাহর কাছে কোন সালাত গ্রহণযোগ্য হবে না পবিত্রতা ছাড়া।

অতএব, অযু পূর্ণাঙ্গ হলে সালাত পূর্ণাঙ্গ হবে, সালাত পূর্ণাঙ্গ হলে জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে। একটা আরেকটার সাথে সম্পর্কযুক্ত বিধায় সব কিছুর আগে; সালাতেরও আগে আমাদের লক্ষ্য করা দারকার আমাদের অজু বা তাহারাতটা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না।

অযু সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

অযু ছাড়া নামাজ হবে কি?

উত্তরঃ নামাজ পড়ার জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে পবিত্রতা অর্জন করা। আর পবিত্র হওয়া জন্য আপনাকে অযু, গোসল কিংবা তায়াম্মুম করতে হবে। আপনার উপর গোসল ফরজ না হলে আপনি অযু করেই নামাজ পড়তে হবে। অযু ছাড়া নামাজ হবে না। এখন যদি প্রশ্ন করেন, যদি অযুর পানি না পাই তাহলে  অজু ছাড়া নামাজ হবে কি? উত্তরঃ না। অজু ছাড়া নামাজ  হবে না। পানি না পেলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়তে হবে।

অজু ছাড়া কুরআন ধরা যাবে কি?

উত্তরঃ সরাসরি অযু ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা যাবে না। যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা লাগবেই, তাহলে পবিত্র কাপড় দ্বারা আবৃত করে অজু ছাড়া কুরআন ধরা যাবে।

অযু ছাড়া কোরআন পড়া যাবে কি?

উত্তরঃ যদি তেলাওয়াত কারীর হেফজ বা মুখস্ত থেকে তেলাওয়াত করতে চায় তাহলে অজু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে। কিন্তু কোরআন খুলে বা স্পর্শ করে ওযু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে না। সুতরাং এক কথায় বলা চলে, কুরআন না খুলে বা না ধরে ওযু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে; মুখস্ত সূরা সমূহ।

ওযু ছাড়া কুরআন শোনা যাবে কি?

উত্তরঃ হ্যাঁ, ওযু ছাড়া কুরআন শোনা যাবে।

অজু ছাড়া জিকির করা যাবে কি না ?

উত্তরঃ অযু ছাড়া জিকির করা যাবে। জিকির আত্মার খুরাক ওযু ছাড়া জিকির করা যায়।

ওযু ছাড়া নামাজ পড়ে ফেললে কি করতে হবে?

উত্তরঃ পূর্ব থেকে গোসল বা তায়াম্মুম এর মাধ্যমে পবিত্র হয়ে থাকলে এবং ওযু ছাড়া নামাজ পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে। আর অপবিত্র অবস্থায় থাকলে নতুন করে আবার ওযু করে নামাজ পড়তে হবে। অপবিত্র অবস্থায় নামাজ গ্রহণযোগ্য না।

ওযু ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করা যাবে কি না?

উত্তরঃ অপবিত্র অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ না করাই উত্তম। যদি গোসল ফরজ না হয়ে থাকে তাহলে বিশেষ প্রয়োজনে ওযু ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করা যাবে।

অযু ছাড়া আযান দেওয়া যাবে কি না?

উত্তরঃ অযু করেই আযান দেওয়া উত্তম। তবে অযু ছাড়া আযান দেওয়া জায়েজ হলেও তা আযানের মত একটা নেক কাজের সৌন্দর্য নষ্ট করে। তাই অযু ছাড়া আযান দিবেন না।

ওযু ছাড়া দোয়া করা যাবে?

উত্তরঃ যে কোন অবস্থায় দোয়া করা যায়। দোয়া করার জন্য অযু করা জরুরী না। হ্যাঁ, ওযু ছাড়া দোয়া করা যাবে।

ওযু ছাড়া মোনাজাত করা যাবে?

উত্তরঃ আল্লাহ পবিত্রতাকে পছন্দ করেন। মোনাজাত করার সময় পবিত্র হওয়াটা মোনাজাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। তাই আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার সময় পবিত্র থাকা উত্তম, তবে ওযু ছাড়া মোনাজাত করা যাবে।

ওযু ছাড়া কবর জিয়ারত করা যাবে?

উত্তরঃ হ্যাঁ, ওযু ছাড়া কবর জিয়ারত করা যাবে। 
অন্যান্য জীবন ঘনিষ্ঠ প্রশ্ন সমূহঃ

সহবাসের পর ফরজ গোসল না করে মেয়েরা গৃহস্থলী কাজ করা বা শিশুকে দুধ পান করানো যাবে কি না?

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর শায়খ আহমাদুল্লাহ (রাঃ) এর এই ভিডিও থেকে নিচের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্নঃ সহবাসের পর ফরজ গোসল না করে মেয়েরা গৃহস্থলী কাজ করা বা শিশুকে দুধ পান করানো যাবে কি না?

উত্তরঃ সহবাসের পর গোসল না করা পর্যন্ত নিন্মে উল্লেখিত পাঁচটি কাজ করা নিষেধ, 

(১) নামাজ পড়া নিষেধ 
(২) তাওয়াফ করা নিষেধ 
(৩) মসজিদে অবস্থান করা নিষেধ 
(৪) কোরআন স্পর্শ করা নিষেধ 
(৫) কোরআন পড়া নিষেধ

এই পাঁচটি কাজ ছাড়া আর কোন কাজ নিষেধ না। অতএব সহবাসের পরে মহিলা জন্য ফরজ গোসল না করে গৃহস্থলী কাজ করা, রান্নাবান্না করা, শিশুকে দুধ পান করানো জায়েজ।

আমাদের দেশে যত কঠোরতা সব মেয়েদের উপরে, ছেলেদের উপরে নাই। ছেলে গোসল ফরজ হওয়ার পর দুই-চার ঘণ্টা শুয়ে আছে, বাহিরে হাঁটাহাঁটি করছে, তাকে কেহু কিছি বলছেনা। সমস্ত চাপগুলা মেয়েদের উপরে। আর মেয়েদের উপর এই ফতোয়া গুলো দেয়ও বেশীরভাগ মেয়েরাই। কথার কথা, ননদ আছে, শাশুড়ি আছে বা জাল আছে, তারা খুঁচাতে শুরু করে; গোসল না করে বাচ্চাকে দুধ খায়াচ্ছে কেন? বাচ্চা কান্না করতে করতে মরে যাওয়ার অবস্থা কিন্তু দুধ খাওয়ায় না। কারন গোসল করে নাই।

এগুলো না জানার কারনে হইছে।

উপরে উল্লেখিত পাঁচটি কাজ ছাড়া যেকোনো কাজ করতে পারেন। এমনকি আপনি ফরজ গোসল না করে সেহেরীও খেতে পাড়েন।

ফরজ গোসল দেরিতে করতে চাইলে আপনার করণীয়ঃ

কোন কারনে আপনি যদি ফরজ গোসল একটু দেরিতে করতে চান, একটু ঘুমিয়ে নিতে চান বা অন্য কোন কাজ করতে চান তাহলে অন্য কাজ শুরু কারার পূর্বে অজু করে নিবেন। একবার আবু হুরায়রা (রাঃ) এর গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় রাস্তার মধ্যে রাসুল (সঃ) এর সাথে দেখা হয়েছিল, আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসুল (সঃ) কে দেখে এড়িয়ে চলে গেছেন, একপ্রকার পালিয়ে যাওয়ার মত। যেয়ে তাড়াতাড়ি গোসল করে আসলেন। রাসুল (সঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) তুমি কোথায় গিয়েছিলে? আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুল আল্লাহ আমার গোসল ফরজ হয়েছিল। আপনার সাথে বসব, সময় দেব অপবিত্র অবস্থায়? রাসুল (সঃ) বললেনঃ মুমিন আবার নাপাক হয় নাকি! আয়সা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল রাসুল (সঃ) সহবাসের পরে গোসল না করে ঘুমাতেন কি না? আয়সা (রাঃ) বলেনঃ অজু করে ঘুমাতেন। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে অজু করা ছাড়াও ঘুমাতেন।

সকল বর্ণনা সামনে রেছে একথা বলা যায়, অজু করা ছাড়াও অন্যান্য কাজ করা যায়। তবে অজু করে নেওয়া উত্তম।

অন্যান্য জীবন ঘনিষ্ঠ প্রশ্ন সমূহঃ

মায়ের লাশ পড়ে আছে ৫ দিন ধরে, লকডাউনে সন্তানরা বাড়িতে বন্দীঃ এখন লাশের কী হবে!

  কুর্মিটোলায় মায়ের লাশ পড়ে আছে ৫ দিন ধরে। আর লকডাউনে সন্তানরা বাড়িতে বন্দী । তাদের মা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা সন্তানেরা জানে না । এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিসিক এলকা-সংলগ্ন চৌধুরীবাড়ির সন্তানেরা। মায়ের লাশ রেখে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে। এছাড়া তাদের ছোট ভাই মালয়শিয়ায় প্রবাসী।

পাঁচ দিন আগে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চৌধুরীবাড়ীর মৃত ছিদ্দিক ভান্ডারী ছেলে মো: নুরে আলম জামানের মা নুরুন্নাহারকে (৬৮)  নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে পৌছানোর আগেই তার মায়ের মৃত্যু হয়।
মরহুমার বড় ছেলে নুরুজ্জামান জানান, ২৪ ঘন্টার মধ্যে করোনা পজেটিভ বা নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু ৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও আমার মায়ের রিপোর্টও জানায়নি কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আমার মায়ের লাশও তারা দেয়নি। 

এলাকার ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার গোলাম মাওলাও নিশ্চিত করেছেন যে মৃত নারী জ্বর, ঠাণ্ডা, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। এরজন্য স্থানীয় লোকজন করোনায় মারা গেছে সন্দেহ করে তাদের বাড়িটি লকডাউন করে রেখেছে।

এ বিষয় স্থানীয় খালেক চৌধুরী জানান, নুরে আলম জামান ৫ দিন আগে ঢাকা মেডিকেলে যান তার মাকে নিয়ে। কিন্তু  সে তার মাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরেনি। আমরা শুনতে পেরেছি যে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার মা মারা গেছেন। এই কারণেই ছেলে মেয়েদের কেউই লাশ আনতে আগ্রহী নন।
মরহুমার বড় ছেলে নুরুজ্জামান (৪৮) জানান, ৭ দিন ধরে জ্বর, ঠাণ্ডা ও শ্বাস কষ্ট ছিল আমার মায়ের। এই অবস্থায় যোগিনিঘাটে আত্মীয়ার বাড়িতে ৩ দিন বেড়ান। পরে আবার বাড়িতে আসেন। বাড়িতে ডা: হুমায়ুনের চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে ১২ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। ১৩ এপ্রিল আলদি ডা: প্রফুল্লুকে দেখিয়ে পুনরায় সদর হাসপাতালে আনা হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠায়। পরে তারা দেখে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর শ্বাসকষ্ট ও ঠাণ্ডা সব লক্ষণের পাশাপাশি তিন-চারবার পাতলা পায়খানা হয়েছে। পরে চিকিৎসা করার আগে আমার মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার মার লাশ হিমাগারে রেখে দেয়। আমাদের বলা হয়েছে যে করোনা পজেটিভ হলে লাশ দেবে না, আর নেগেটিভ হলে লাশ ফেরত দেবে।
তিনি বলেন, ১৩ এপ্রিল থেকে আজ ১৭ এপ্রিল ৫ দিনেও এই রোগীর কোনো রিপোর্ট তার কাছে আসেনি এবং কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে কোনো ফোন এ পর্যন্ত আসেনি। আমি নিজে নিজেই লকডাউনে আছি।

পরিবারের লোকজন অপেক্ষায় আছে কখন কুর্মিটোলা থেকে কখন ফোন আসবে যে তোমার মায়ের করোনা রিপোর্ট নেগিটিভ। মায়ের লাশ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পড়ে আছে পাঁচ দিন ধরে। কিন্তু এই ৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রিপোর্ট না আসায় পরিবারটি হতাশ।